up

# মৃত রেলওয়ে(কাঞ্চনাবুড়ি,থাইল্যান্ড )


আমার মতো অনেকেই ফরাসি লেখক পিয়েরে বুলের বই ‘দ্য ব্রিজ অন দ্য রিভার কাওয়াই’ বইটা পড়ে থাকবেন।তারা জানেন, বইটি কোন কল্পনাপ্রসূত কাহিনী নিয়ে নয়,এটি মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে ফেরা একজন যুদ্ধবন্ধীর অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখা।এই বই পড়ার পর থেকে ডেথ রেলওয়ে নিয়ে আমার আগ্রহ ছিল।এবার সময় পেয়ে কাঞ্চনাবুড়ি গেলাম।যদিও আমি এর আগেও কাঞ্চনাবুড়ি গিয়েছিলাম।তবে তখন বিশেষ কারনে শুধু টাইগার টেম্পল দেখেই ফিরে গিয়েছিলাম।কাঞ্চনাবুড়ি ব্যাংকক থেকে ১২৯ কিলোমিটার দূরে।ক্যাবে সময় লেগেছিল আমাদের প্রায় 3 ঘণ্টা। ব্যাংককের সাউদার্ন বাস টার্মিনাল থেকে ১৫/২০ মিনিট পর পর বাস ছাড়ে কাঞ্চনাবুড়ির উদ্দেশ্যে।ব্যাংককের নর্থ রেলওয়ে স্টেশন থেকেও দিনে দু’বার কাঞ্চনাবুড়ি ট্রেন যায়।আমরা কাঞ্চনাবুড়িতে তিন দিন দুই রাতের পরিকল্পনা করে এসেছি। তবে সাধারণত মানুষ কাঞ্চনাবুড়ি যায় ট্র্যাভেল এজেন্সির মাধ্যমে 'টে টুর' নিয়ে,মানে হল দিনে গিয়ে দিনে ফিরে যায়।আমি অবশ্য কোন ঐতিহাসিক স্থান এভাবে দৌঁড় ঝাঁপ করে বা শুধু দেখার জন্য দেখার পক্ষে নই।কারন আমি ঐতিহাসিক স্থান শুধু চোখে দেখি না,অনুভবও করি।কোন ঐতিহাসিক জায়গা দেখার আগেআমি অবশ্যই সেই স্থান নিয়ে বেশ ভালো ভাবে জানার চেষ্টা করি।যেন আমি নিজেকে ইতিহাসের সেই সময়ে নিয়ে যেতে পারি অবলীলায়।



কাঞ্চনাবুড়িতে এসে প্রথমে গেলাম ওয়ার সিমেট্রি। এখানে চারিদিকে সবুজের সমারোহ,তবু কোথায় যেন চাপা কান্নার শব্দ ভেসে আসছে।এই সমর সমাধিতে আছে কমনওয়েলথ ভুক্ত দেশের মোট পাঁচ হাজার ৮৪ জন এবং পর্তুগালের এক হাজার ৮৯৬ জন সৈনিক কবর। মূলত জাপানিরা রেলওয়ে নির্মাণে সময় নিহত যুদ্ধবন্দিদের মৃতদেহ মাটি চাপা দিয়ে রেখেছিল জঙ্গলে,তাদের অস্তিত্ব খুঁজে বের করে সিমেট্রিগুলোতে স্থানান্তর করা হয়েছে।বাংলাদেশের চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লায় দুটো ওয়ার সেমেট্রি রয়েছে।বহু বছর আগে আমি গিয়েছিলাম।এই ওয়ার সেমেট্রি বাংলাদেশের দুটোর মতোই, তবে আয়তনে অনেক বড়।মাঝখানে একটা চমৎকার ভাস্কর্য, তার চারপাশে সমাধি।জ্যামিতিকভাবে সাজানো সমাধি গুলোতে শহীদদের নাম লিখা। 'ডেথ রেলওয়ে' নির্মাণের সময় প্রায় ১৬ হাজার যুদ্ধবন্ধী মারা যায়।পরবর্তীসময়ে কবরগুলো চিহ্নিত করে মোট তিনটি সমাধিতে স্থানান্তর করা হয়, থাইল্যান্ডের চুংকাই এবং কাঞ্চনাবুড়ি, আর বার্মায়।এই তিনটির মধ্যে সবচেয়ে বড় কাঞ্চনাবুড়ির এই সমাধি।





ওয়ার সিমেট্রি থেকে বের হলে আমাদের ড্রাইভার কাম গাইড আমাদেরকে নিয়ে যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ জাদুঘরে।ডেথ রেলওয়ে তৈরির সময় যেসব দেশের যুদ্ধবন্দীরা প্রাণ হারিয়েছে বা নির্যাতনের স্বীকার হয়েছিল, সেই দেশগুলোর নামের আদ্যক্ষর দিয়ে(জাপানের জে, ইংল্যান্ডের ই, অস্ট্রেলিয়ার এ, থাইল্যান্ডের টি ও হল্যান্ডের এইচ) 'জিথ জাদুঘর' নাম রাখা হয়েছে।

জাদুঘরের প্রবেশ পথে দাঁড়িয়ে থাকা রেল ইঞ্জিনটি জাদুঘরের বিষয় সম্পর্কে ধারনা দেয় যে আমরা রেল সংক্রান্ত কোন জাদুঘরে যাচ্ছি।যদিও এটি পুরোপুরি তাও নয়,এটি হল একটা রেলওয়ে তৈরি করতে সমর কৌশলের বা নির্যাতনের স্মৃতি জাদুঘর।কয়লাচালিত ইঞ্জিনটি এখন সময়ের আবর্তে জং ধরে গেছে এবং ক্ষয়ে যাচ্ছে শরীরের কিছু অংশ। ইঞ্জিনটির সামনে একটা জাপানি পতাকা লাগানো।পেছনে বিভিন্ন দেশের ছোট ছোট পতাকা লাগানো।আমি বাংলাদেশের পতাকা খুঁজেছিলাম,পাইনি।এই শিশুসুলভ আচরণটা আমার অভ্যাস হয়ে গেছে,কোথাও এমন কিছু দেখলে নিজের দেশের নাম বা পতাকা খুঁজে দেখা।যদিও সংগত কারনেই এখানে বাংলাদেশের পতাকা থাকবে না, কারন সেই সময়ে বাংলাদেশের জন্মই হয়নি।ইতালি, জর্ডান, বেলজিয়াম, লাটভিয়া, এস্তোনিয়া, কানাডা, কলাম্বিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মিশরসহ আরও অনেক দেশের পতাকা ছিল।ইঞ্জিনের গায়ে সাদা রং দিয়ে থাই ও ইংরেজিতে লেখা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানিরা বার্মা এবং ভারত পর্যন্ত নিজেদের আধিপত্য বিস্তৃত করার উদ্দেশ্যে যুদ্ধ রসদ আনা-নেওয়ার জন্য এই ট্রেনটি ব্যবহার করত। ট্রেনের ওপর দাঁড়িয়ে সবাই ছবি তোলায় ব্যস্ত।বিশ্বযুদ্ধের এ রকম একটা গুরুত্বপূর্ণ স্মারকের এমন যথেচ্ছা ব্যবহার আমার ভালো লাগে নাই।এভাবে চলতে থাকলে পুরো ইঞ্জিনটাই এক সময় নষ্ট হয়ে যাবে।

আমরা টিকেট নিয়ে ভিতরে চলে গেলাম।জাদুঘরের ভেতর রয়েছে যুদ্ধের সময় জাপানিদের ব্যবহৃত জিপ গাড়ি, এর ভেতর জাপানি সেনা অফিসারের মূর্তি, ঘোড়ায় টানা গাড়ি, মোটর সাইকেল, বোমার খোল, পত্রিকার খবরের কাটিং,আরো অনেক কিছু।ভাস্কর্য শিল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে জাপানী সৈন্যদের অত্যাচারের ইতিকথা।যেমন, অস্ত্রধারী জাপানি সেনাদের প্রহরায় রেললাইনে কর্মরত রুগ্ন শরীরের প্রায়-উলঙ্গ যুদ্ধবন্দীদের ভাস্কর্যমূর্তি।জাদুঘর ভবনের মাঝখানে খোলা জায়গায় মালগাড়ির মতো একটা রেলের বগি, সেটার দরজায় গরাদ লাগানো, ভেতরে কৌপীন পরা এক যুদ্ধবন্দীর মূর্তি। বাঁশের ব্যারাকে যুদ্ধবন্দীদের যে মানবেতরভাবে থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল সেই ভাস্কর্যও রয়েছে। একটি দেয়ালের গায়ে সারি সারি সাজানো রয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমর-নেতাদের মূর্তি। এক জায়গায় কাচের ঘেরার ভেতর রয়েছে গণকবর থেকে উদ্ধার করা এশীয় শ্রমিকদের মাথার খুলি ও হাড়গোড়। দোতলার প্রায় পুরোটা জায়গা জুড়ে ছিল জাপানি সৈন্যদের ব্যবহার করা হাজারো জিনিসপত্র।এক কথায় জাদুঘরে জাপানি দখলদারি, অবস্থান ও তাদের অত্যাচার-নিপীড়নের নানা স্মারকচিহ্ন ও নিদর্শন সংরক্ষণ করার চেষ্টা করা হয়েছে।জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হয়েছে সেই সময়ের বিভিন্ন মর্মস্পর্শী আলোকচিত্র।এছাড়াও ছিল বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র।কোন সৈনিকের ব্যবহৃত একটা মাউথ অর্গানও দেখলাম।আরোও ছিল মগ,থালা,টাইপরাইটার ,মশারি,কলম আরো কত কি!এককথায় দর্শনার্থীকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও ইতিহাসের সেই সময়ে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য সব আয়োজনই ছিলো। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল স্মৃতি স্মারকে পরিপূর্ণ এই জাদুঘরের যতটা যত্নের দরকার, তার অভাব নজরে পড়েছে আমার।বিশেষ করে নিয়মকানুন গুলো আরো কঠোর হওয়া উচিৎ দর্শনার্থীর জন্য।নইলে কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে ইতিহাসের একটি অধ্যায়।



জাদুঘর থেকে বের হয়ে আমরা চলে গেলাম আমাদের আগেই বুকিং করা রিসোর্ট 'U- inchantree'।রিসোর্টটি কাওয়াই নদীর পাড়ে।শহরের যান্ত্রিকতা থেকে মুক্ত শান্ত পরিবেশ, আমার সবসময় পছন্দ। এমন পরিবেশ,যেখানে নিজের সাথে কথা বলা যায়।



বিকাল গড়িয়ে কখন সন্ধ্যা হয়ে গেল টের-ই পেলাম না, নদীর পাড়ের খোলা রিসোর্ট রেস্টুরেন্টে বসে কফি আর বইয়ের সাথে।
পরদিন ব্রেকফাষ্ট সেরে চলে গেলাম ৭ স্তরের ঝরনা বলে পরিচিত 'ইরাওয়ান ওয়াটার ফলসে'।এটি নাকি এশিয়ার সবচেয়ে সুন্দর জলপ্রপাত।

রেলওয়ে সময়সূচী



সেখান থেকে ফিরে এসে গেলাম ঐতিহাসিক কাওয়াই নদী ব্রিজ।এটা আমার রিসোর্ট থেকে পায়ে হাঁটা দুরত্বে। এই ব্রিজ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মর্মান্তিক স্মৃতি বিজড়িত। স্টেশনের প্লাটফরমের এক পাশে ছোট একটি টিকেট বুথ। টয় ট্রেনের মত এই ট্রেনে করে আমরা কাওয়াই ব্রিজ পেরিয়ে পরের স্টেশনে যাই।ট্রেনটি চলতে শুরু করলে টুরিস্টরা আনন্দে হইচই শুরু করে এবং কাওয়াই ব্রিজের উপরের ঝুল-বারান্দার মতো রেলিং ঘেরা জায়গায় দাঁড়ানো টুরিস্টরা হাত নেড়ে বিদায় দেয় আর যাত্রীরাও প্রতি উত্তর দেয়।যদিও এই রেলওয়ে এখন টুরিস্ট স্পট, মূলত এই 'ডেথ রেলওয়ে' ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়ের সাক্ষী।৬১ হাজার ব্রিটিশ, অস্ট্রেলীয়, নিউজিল্যান্ডার,ড্যানিশ,ডাচ বন্দি সৈন্য এবং ভারত, চীন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, বার্মা এবং থাইল্যান্ডের বন্দি প্রায় ২ লাখ মানুষকে দিয়ে ৪১৫ কিলোমিটার রেলপথ তৈরি করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল থাইল্যান্ড থেকে জাপানীদের যুদ্ধের সামগ্রী ও রসদ সরবরাহ এবং সৈন্যদের বার্মায় চলাচলের সুবিধে করা।থাইল্যান্ড আর বার্মার মধ্যে সুযোগ সৃষ্টি করা রেললাইনটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল মোট ১৪ মাস। এই রেল লাইনটি তৈরি করতে গিয়ে এক লক্ষেরও বেশিএশীয় শ্রম-দাস এবং ১৬,০০০ ব্রিটিশ, আমেরিকান, অস্ট্রেলিয়ান এবং ডাচ যুদ্ধবন্দী প্রাণ হারায়।সব মিলিয়ে দেড় লাখের কাছাকাছি হবে।সুনির্দিষ্ট কোন পরিসংখ্যান নেই এই মৃত সংখ্যার। কারণ এসব শ্রমিকের কোনো রেকর্ড রাখা হতো না।এই রেলপথের কাঠের স্লিপার বসাতে গিয়ে প্রতি কিলোমিটারে প্রায় ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।মানে প্রতি চারটি স্লিপারে একজন করে মানুষের মৃত্যুর প্রতীকী বহন করে।এছাড়া মিত্র বাহিনীর বোমারু বিমানের বোমা থেকে ব্রিজ রক্ষার জন্য মানববর্ম হিসেবে হতভাগা যুদ্ধবন্দীদের গাদা করে নিয়ে গিয়ে ব্রিজের ওপর লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে বিমানের উদ্দেশে হাত নাড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয়, যাতে মিত্র বাহিনীর বিমান ব্রিজের ওপর বোমা না ফেলে। নিরস্ত্র অসহায় বন্দীদের রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল কাওয়াই নদীর পানি।নদীর পানিতে হারিয়ে যায় শত শত বন্দীর মৃতদেহ,যাদের হিসেব কেউ কখন রাখেনি।তাঁদের সংখ্যা এত বেশী ছিলো যে গলিত মৃতদেহের কারণে পরের কয়েক দিন এই নদীর পানি ব্যবহার অযোগ্য হয়ে গিয়েছিল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পুরো রেলওয়ে সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় দুই দেশই।রেলপথটির ২৬৩ কিলোমিটার থাইল্যান্ডে এবং ১৫২কিলোমিটার বার্মায়। পরে থাই এবং বার্মিজ সরকার যৌথ সিদ্ধান্তে তারা তাদের কমন বর্ডার থেকে এবং প্রত্যেকের এলাকায় ১০০কিলোমিটার ধ্বংস করে ফেলে।কারন একদিকে নিরাপত্তার প্রশ্ন, অন্য দিকে নৈতিকতা বিরুদ্ধ।অবশেষে যুদ্ধবন্ধীদের রক্তে ভেজা এই রেলওয়ের সমাপ্তি ঘটে।





দুপরের খাবারের জন্য স্টেশনের সাথেই একটা রেস্টুরেন্ট গেলাম,সেখানে ডেভিড লিনের 'ব্রিজ অন দ্য রিভার কাওয়াই' ছবিটি চলছিল।প্রথমে আমি ভেবেছি কাকতালীয় ,পরে খেয়াল করলাম রেস্টুরেন্টে অনেক গুলো ছবি বাঁধানো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিষয়বস্তু নিয়ে।খাওয়ার বিল পরিশোধ করতে গিয়ে রেস্টুরেন্টের মালিক মহিলার সাথে কথা বলে জানলাম তারা সারাক্ষণই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিভিন্ন মুভি বা ডকুমেন্টটারী চালায় টুরিস্টদের এই জায়গার ইতিহাস জানানোর দায়িত্ববোধ থেকে।ভালো লাগলো তাদের উদ্যোগটা।এমন দায়িত্ববোধ যদি আমাদের স্মৃতিসৌধ এলাকার রেস্তোরাঁ গুলোর থাকতো, তাহলে স্মৃতিসৌধ এলাকা 'পিকনিক স্পট' এর মতো ব্যবহার করতে মানুষের নৈতিকতায় কিছুটা হলেও বাঁধতো।







বিকালবেলা আমরা একটা ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে তিনটা থাই এবং চাইনিজ মন্দির দেখতে গিয়েছি।নৌকা ভাড়ার তালিকা আছে।তবে লিখা দামের চেয়ে অনেক কমে নৌকা মিলে দামাদামি করলে।মন্দির দর্শনের চেয়ে কোন অংশে কম আনন্দদায়ক নয় এই নৌকা ভ্রমণ।নদীর দুইধারের পদ্ম ফুল আর স্বচ্ছ জল আমাকে বেশ মুগ্ধ করেছে।কারন দুই পাড়েই রিসোর্ট আর রেস্টুরেন্ট, কিন্তু নদী তারা দূষণ করেনি।







রাতের খাবারের জন্য আমরা বেছে নিলাম নদীর ওপর ভাসমান রেস্তোরাঁ।রেস্তোরাঁটি ভাসতে ভাসতে চলছে শান্ত কাওয়াই নদীতে।আমি ভাবছিলাম এই শান্ত কাওয়াই নদী কত লোমহর্ষক স্মৃতিই না তার বুকে লুকিয়ে রেখেছে।হালকা মিউজিক আর সূর্যাস্তের লাল আভা নিস্তরঙ্গ কাওয়াই নদীর পানির আয়নায় পড়ে অন্য রকম অনুভূতি জাগিয়ে দিলো আমার মাঝে।রেস্তোরাঁটি যখন কাওয়াই ব্রিজের নীচে,তখন ব্রিজের ওপর দিয়ে ঝিকঝিক আওয়াজ তুলে যাচ্ছিল একটা ট্রেন।রেস্তোরাঁর মিউজিক ছাপিয়ে আমার কানে ভেসে আসে রেলের ঝিকঝিক শব্দের সাথে যুদ্ধবন্দি মানুষের কান্নার প্রতিধ্বনি। লোমহর্ষক স্মৃতি বুকে লুকিয়ে রেখেছে।রেস্তোরাঁয় বসে নদীর পাড়ের একটা বৌদ্ধ মন্দিরের চত্বরের বড় একটি বুদ্ধ মূর্তিতে নজর পড়ে, মনে পড়লো মহামতিবুদ্ধের মানবতাবাদ আর অহিংসনীতি।পৃথিবীর সর্বত্র শান্তি ছড়িয়ে পড়ুক।।





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ads Inside every post