চতুর্থ দিনে আমরা গেলাম ওয়াটার স্পোর্টসেরও স্বর্গরাজ্য বালির নুসা দুয়ায়। 'আন্ডার ওয়াটার ওয়াকিং' নামের এক ওয়াটার স্পোর্টসে।সব ধরনের ওয়াটার এক্টিভিটি যেখান থেকে হয়।আমরা যাওয়ার পর আমাদের একটা ফরম পূরণ করতে হলো ঠিকানা ছাড়াও শারীরিক সমস্যা জনিত তথ্য দিতে হলো। স্বাক্ষর করতে হলো দুর্ঘটনা জনিত মৃত্যুর দায় নিতে।আমাদের জিনিশপত্র রাখার জন্য লকার দেয়া হলো এবং বিশেষ পোশাক পরতে দেয়া হলো।তারপর আমাদের স্পিড বোট করে নিয়ে যাওয়া হলো সাগরের মাঝের ভাসমান একটা জেটিতে।সেখানে নিয়ে বিভিন্ন সাইন এবং পানির নীচে কিভাবে হাঁটতে হবে, কি করা যাবে না, কি করা যাবে, কি কি সমস্যা হতে পারে সব শেখানো হলো।পানি,জুস দেয়া হলো আমাদের।আমরা জেটিতে বসা অবস্থায় কয়েক জন উঠে এলো কেউ বলল 'so amazing',কেউ বলল 'death hole'.আমি বেশ কনফিউজড।আমার পার্টনার রিভিউ শুনে আমাকে বলল 'বাদ দাও।টাকা দিয়েছি যাক,জীবনের ঝুঁকি নিও না,তুমি কিন্তু সাঁতার জানো না'।আমি এতদূর এসে পেছনোর পাত্রী নই।অক্সিজেন সিলিন্ডার,গাইডের সংখ্যা,স্রোত, এবং উদ্ধার কর্মী সব বিবেচনা করে পর্যটক পানিতে নামায় তারা।তারা টুরিস্টদের সেফটির বিষয়ে আন্তর্জাতিক মান মেন্টেন করে।
নুসা দুয়া (বালি, ইন্দোনেশিয়া )
কিছুক্ষণ পর আমাদের পালা এলো।আমি সাঁতার জানি না,তাদের জানালাম।তারা আগের মতো আমাকে আশ্বস্ত করলো এতে কোন সমস্যা হবে না।প্রতি জনের জন্য আলাদা গাইড,এতে আমার সাহস বেড়েছে।মূলত সাঁতার না জানা শর্তেও আমি 30/35ফিট গভীর সমুদ্র নামছি এই ভরসায় যে তারা আমার শত্রু না,আমাকে মারার কোন ইচ্ছে তাদের নেই।এছাড়া আমি সাঁতার জানি না আমার গাইড তো জানে,সেই আমাকে সেইভ করবো। বুদ্ধিটা ভালো না আমার😂।জেটির সিঁড়ি দিয়ে আমি পানিতে নেমে গেলাম গলা পর্যন্ত, তারপর আমার মাথায় একটা অক্সিজেনের সিলিন্ডারের মতো হেলমেট পরিয়ে দেয়া হলো।এটা এত ভারী এর চাপা আমি মুহূর্তেই পানির গভীরের দিকে নেমে যাচ্ছি, আমি আতংকে মরে যাওয়ার অবস্থা।মিনিটেই আমার হাত ধরল গাইড,সে সাঁতরে নিয়ে চলল নিদিষ্ট স্থানের উদ্দেশে।সাগরের যখন অনেক গভীরে নেমে গেলাম তখন আমার চারপাশ দিয়ে ছোট বড় অনেক রঙিন মাছ সাঁতার কাটছে।এরপর আমাকে যেখানে নিয়ে দাঁড় করিয়ে দিলো মনো হলো কোন জাহাজ বা কিছুর কোন ধ্বংসাবশেষ।খুব স্রোত তাই আমি দাঁড়াতে পারছিলাম না তাই একটা রড ধরে দাঁড়াতে ইশারা দেয়া হলো। যে মাছ এতদিন শুধু অ্যাকুরিয়ামে দেখেছি, তা নিজের চারপাশে ঘুরতে দেখে, মাছ ধরার ছেলেমানুষি চেষ্টায় মনের ভয় চলে গেছে।আমাকে গাইড মাছের খাবার হাতে দিয়ে চাইলে ব্যালেন্স রেখে হাঁটতে পারি ইশারা দিলো।সে আমার ভিডিও করছে আমি মনের সুখে মাছের পিছনে যাচ্ছি আর ধরার আপ্রাণ চেষ্টায় আছি।এরমাঝে আমার পার্টনার এসে যোগ দিলো আমার সাথে।সে কয়েক মিনিট পরই কুইট করে উপরে চলে গেল,কারন উনার শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল তাই।যদিও আমি তখন বুঝিনি কোন সমস্যা হচ্ছিল যে।ধীরে আমার সাহস বেড়ে যাওয়ায় আমি নিশ্চিত মনে মাছকে খাবার দিচ্ছিলাম, তখন গাইড ইশারায় জানালো আমার সময় 30 মিনিট আগেই ওভার, আমাকে উঠতে হবে।
সাগরের নীচে রঙিন মাছের রাজ্যে
আমরা টার্মিনাল ফিরে এলে আমাদের ভিডিও সিডি বানিয়ে দিলো কয়েক মিনিটে।ভিডিও করার বিল আলাদা, 90ডলার দিতে হয়।সম্পূর্ণ নতুন এডভেঞ্চারের অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা রিসোর্টের পথে রওনা হলাম।পথে আমাদের গাড়ি একটি সোনা-রুপার অলঙ্কার বানানোর কারখানা কাম শো-রুমে থামল।কিন্তু আমি কেনাকাটায় আগ্রহী নই দেখে সময় নষ্ট করলাম না।
অলংকার তৈরির কারখানা(বালি,ইন্দোনেশিয়া)
রিসোর্টে এসে সুইমিংপুলে নামলাম।পুলে অনেক সুন্দর করে গোছানো একটা বার ছিল, বাগানের মধ্যে দিয়ে ঘোরানো লম্বা পুলটা রিলাক্স করার জন্য চমৎকার।পুলবারে কেউ বিংগো খেলছে,ড্রিংক করছে মোটকথা জমজমাট অবস্থা।আমার পার্টনার সবসময় সাঁতার জানার বাহাদুরি দেখিয়ে দুরে চলে গিয়ে আমাকে খেপিয়ে মজা পায়।আজ আমি ব্যস্ত বিংগো খেলায়,যদিও আমি প্রথমবার খেলছি।খেলায় জিতে দুটো 'বিনতা' বিয়ার গিফট পেলাম।আমি মহা খুশি যদিও আমি খাই না।দিয়ে দিলাম আমাকে খেলা শেখানো অস্ট্রেলিয়ানকে আর পার্টনারকে।
লাঞ্চ সেরে আমরা ড্রাইভার কাম গাইড কৃষ্ণার সাথে তানার লটের পথে রওনা হয়েছিলাম।উদ্দেশ বালির বিখ্যাত সানসেট পয়েন্ট তানার লট থেকে সূর্যের বিদায় পর্ব দেখা।কুটা থেকে প্রায় 20 কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে তানার লট মন্দির।মন্দিরটি ফটোগ্রাফির জন্য একটি জনপ্রিয় এবং সাংস্কৃতিক প্রতীক বালির।
ইন্দোনেশিয়া মুসলমান প্রধান দেশ হলেও বালিতে হিন্দু ৮৩.৫%,মুসলিম ১৩.৪%। বালীয় সংস্কৃতির পুরোটাই ভারতীয়, চীনাদের দ্বারা প্রভাবান্বিত।প্রদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসাধারণের আচরিত ধর্মমতটি হিন্দুধর্মের একটি বিশেষ রূপ।সর্বপ্রাণবাদ,পূর্বপুরুষ পূজা এবং বোধিসত্ত্ব পূজার সংমিশ্রণে হিন্দুধর্মের এই স্বতন্ত্র রূপ।আমাদের উপমহাদেশীয় হিন্দু রীতিনীতির থেকে কিছুটা স্বতন্ত্র।বালির টুরিস্ট আকর্ষণের মূল কেন্দ্রে আছে প্রাচীন মন্দির।এই মন্দির গুলোর স্থাপত্যশৈলী যেমন দৃষ্টিনন্দন,তেমনি অবস্থানগত পরিবেশের সৌন্দর্য বর্ণনাতীত।আর এই মন্দিরের আধিক্যের কারণে বালিকে বলা হয় দেবতাদের দ্বীপ, শান্তির দ্বীপ।
৩০ হাজার রুপিয়া দিয়ে টিকিট কেটে আমরা মন্দির এলাকায় প্রবেশ করলাম। মন্দিরটি সাগরের মাঝে একটা বড় পাথরের ওপর।জোয়ারের সময় মন্দিরটিকে একটি ছোট দ্বীপের মতোই দেখায়।তবে ভাটার সময় প্রবালের রাস্তা দৃশ্যমান হয়ে মূল ভূখণ্ডের সাথে যোগ হয়।আমরা যখন গিয়েছিলাম, তখন জোয়ারের পানি নামছে।আমরা হাঁটু পানি দিয়ে হেঁটে মন্দিরে যাই। মূল মন্দিরের ভেতরে সবার ঢোকার অনুমতি না থাকলেও আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বী হওয়ায় আমাদেরকে তাদের রীতি অনুসারে শুদ্ধ পানিদিয়ে হাত, মুখ ধুয়ে,কানে ফুল ও কপালে কয়েকটি চাল লাগিয়ে ওপরে যাওয়ার অনুমতি দিলেন মন্দির সেবক।কিছু সময় কাটিয়ে আমরা চলে এলাম উপরে।
মন্দির প্রাঙ্গণ চমৎকার করে গোছানো নাম জানা অজানা সব ফুল গাছ দিয়ে।ডেজার্ট রোজ, কাঠ গোলাপ,বাগান বিলাস ফুলেরগাছ গুলোকে বিশেষ ভাবে ছাঁটা। বয়স আর কাটিং এর কারনে চেনা গাছ গুলো অচেনা রূপ নিয়েছে।
গাইড কৃষ্ণার কাছে শুনলাম মন্দিরের জন্মকুণ্ডলী। বালিনিজ ভাষায় তানার লট শব্দের অর্থ নাকি "সমুদ্রের ভূমি"। জনশ্রুতি আছে তানাহ লট মন্দিরটি ষোড়শ শতকের দিকে 'ড্যাং হিয়াং নিরার্থে' নামের এক মহাপুরুষ এই শিলা-দ্বীপ বা পাথর খণ্ডটি দেখেছিলেন এবং বিশ্রাম নিয়েছিলেন।পরে তিনি স্থানীয় জেলেদের পরামর্শ দেন এই শিলার উপর একটি মন্দির তৈরি করতে।কারণ তিনি অনুভব করেছিলেন যে এটি সমুদ্রের দেবতা বরুণ বা ভাটারা সেগারাকে পূজা করার একটি পবিত্র স্থান।1980 সালে, মন্দিরের শিলা মুখ ভেঙে পড়তে শুরু করছিল এবং মন্দিরের চারপাশে এবং ভিতরের এলাকা বিপজ্জনক হয়ে যায়।জাপান সরকার তখন ইন্দোনেশিয়ার সরকারকে আর্থিক সহযোগিতা করে ঐতিহাসিক এই মন্দির এবং বালির আশেপাশের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য স্থান সংরক্ষণের জন্য।
তানার লট মন্দির (বালি, ইন্দোনেশিয়া )
আকাশ মুখ ভার করে আছে দেখে আমি বেশ হতাশ,কারন আমার সূর্যাস্ত দেখার আশায় পানি ঢেলে দিয়েছে।তবে দেড় হাজার বছরের পুরানো মন্দিরের দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশিল্প, নির্মল ও শান্ত পরিবেশে মন সহজেই স্নিগ্ধ হয়ে ওঠে। গাইডের ভাষ্য,পূর্ণিমার রাতে জোয়ারের সময় এই মন্দিরের অপরূপ রূপ চোখে পড়ার মতো সুন্দর।
পঞ্চম দিন,খুব সকালে তাড়াহুড়ো করে ব্রেকফাস্ট সেরে একটা ব্যাকপ্যাক নিয়ে লবি অপেক্ষা করলাম গাড়ীর।আজ আর আমরাএকা নই, এজেন্সির আরো গেস্ট আছে।আমরা ছিলাম লাস্ট গেস্ট,তাই আমাদের তুলে সোজা চলে গেল একটা জেটিতে।সেখানে আমাদেরকে পিংক কালারের ব্যান্ড হাতে লাগিয়ে দিলো গাইড।20/25 মিনিট অপেক্ষার পর হাতের ব্যান্ডের ধরে লাউড স্পিকারেকল করায় আমাদের গাইড আমাদের বোটে তুলে দিলো।এই ফাস্ট বোট,50/60জনের ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন।এটা স্পিড বোটেরমতো দেখতে, আকারে বড়। নুসা লেম্বগান এ যাওয়ার জন্য অনেক ফাস্ট বোট আছে।ইচ্ছে করলে নিজেরা এসেও টিকেট কেটেযাওয়া যায়।টিকেট 200000 রুপিয়া ওয়ান ওয়ে।রিটার্ন সহ নিলে কম পড়বে।তবে আমার মতে লোকাল এজেন্সির সাথে যাওয়াই ভালো বিশেষ করে ডে টুর যারা করতে চান।কারন দাম প্রায় একই কিন্তু ঝামেলা অনেক।
আমরা বোটে উঠেই দেখি প্রতি সিটের সাথে একটা জুস, পানি দেয়া আছে।কিছু সময় পর উত্তাল সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লাদিয়ে আমাদের বোট চলতে শুরু করলো।বোট ছাড়ার পরে জানালার পাশের দাঁড়িয়ে আমি আর এক চাইনিজ মেয়ে তার স্বরেগান করেছি মহাআনন্দে।যদিও বাতাসের বেগ আর ইন্জিনের শব্দে নিজেরাও শুনতে পাই নাই😂।তবে দুজনের গান দুজন ভিডিও করেছি মজা করে।
আমরা আইল্যান্ডে পৌঁছানোর পর হাতে ব্যান্ডের কালার ধরে আমাদেরকে একজন গাইড রিসিভ করে একটা সাটল বাসে(টেম্পুরমতো) তুলে নিল। দ্বীপটা একটু গ্রাম টাইপ, শান্ত-নিরিবিলি।অনেকটা গ্রামের মতো।রাস্তা এখানের রাস্তাঘাট প্রশস্ত নয়,তবে ভাঙা নয়।কেমন যেন ছায়াঢাকা শ্যামল,নিরব পরিবেশ।কিছু রিসোর্ট,গেস্ট হাউস, রেস্তোরাঁ আর স্বল্প দোকানপাট ছাড়া তেমন কিছুই নেই।রাস্তায় স্কুটি আর টেম্পু ছাড়া তেমন যানবাহন চোখে পড়েনি।এখানে ঘোরার জন্য ঘণ্টা হিসেবে স্কুটি ভাড়া পাওয়া যায়।
ব্যম্বু রাইডের কিশোর দল(নুসা লেম্বগান,বালি, ইন্দোনেশিয়া)
আমাদেরকে ছোট রিসোর্টে নিয়ে আসা হলো।কর্মীরা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে প্রতি জনকে একটা লকারের চাবি দেয়া হলো নিজেদের দামী জিনিশ রাখার জন্য।কারন কিছুক্ষণ পর সবাইকে ওয়াটার এক্টিভিটির জন্য নিয়ে যাওয়া হবে।আমাদেরকে স্নাকেস আর জুস দিয়ে আপ্যায়ন করা হলো।তারপর গাইড এসে আমাদের ওয়াটার এক্টিভিটির বিষয়ে ব্রিফিং দিলো,কি করা যাবে, কি করা যাবে না, কোথায় ড্রাইভ দেয়া যাবে না,সামুদ্রিক কোন জিনিষ সংগ্রহ যাবে না, প্রবাল- শৈবাল বা জলজ কোন বৈচিত্র্য নষ্ট হয় এমন কিছু করা যাবে না।এসব আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
আমাদের বোট করে নিয়ে প্রথম স্কুবা ডাইভে।যারা সাঁতার জানে তাদের ড্রাইভ দিতে বলেছে, আর বাকীদের জন্য লম্বা রশি পানিতে দেয়া হয়েছিল, তারা সেটা ধরে সাঁতার দিবে।তবে রশি ধরে লাইফ জ্যাকেট পরে ভাসা চেষ্টায় আমি হাঁদারাম ছাড়া কেউছিল না।কারন কেউ সাঁতার না জেনে ওয়াটার এক্টিভিটিতে আসে না,টাকা নষ্ট করতে।কিন্তু আমি বুঝি সিঁড়ি বা রশি ধরে একটু আধটু হাত পা ছোড়াছুঁড়ি করছি,তাও মন্দ কি!আমার অবস্থা দেখে বোধ হয় গাইডের দয়া হলো,সে আমাকে চশমা পরিয়ে নিয়ে গেল হাত ধরে অনেক গভীরে।তারপর 4d চশমা দিয়ে নীচে দেখার কৌশল দেখিয়ে দিয়েছিল।জীবন্ত প্রবাল,আর শৈবালের ফাঁকে ফাঁকে কালারফুল মাছের ছুটোছুটি।স্রোতের সাথে শৈবালগুলো এমন ভাবে দুলচ্ছিল,যেন বাতাসে গাছ দুলতে থাকে।সমুদ্রের তলদেশের এমন সৌন্দর্য বর্ণনাতীত।কোন শব্দই যথার্থ নয়,এমন সৌন্দর্যের কাছে।যদিও আমার এর আগেও খানিকক্ষণের অভিজ্ঞতা আছে আন্ডার ওয়াটার ওয়াকিং এর মাধ্যমে।
চলন্ত বোটের পাটাতনের 4d কাঁচের উপর থেকে সমুদ্রের নীচের প্রবাল, শৈবালের ছবি(বালি,ইন্দোনেশিয়া)
কিছুসময় পর সবাইকে নিয়ে বোট আবার চলতে শুরু করলে খেয়াল করলাম বোটের পাটাতনে 4d কাঁচ দেয়া।বোটটা এখন ধীরেচলছে,কাঁচ দিয়ে নীচের প্রবাল, শৈবাল দেখতে দেখতে আমরা চলে এলাম আরেক স্কুবা ড্রাইভের জন্য।এখানে বলে দেয়া হলো বোট থেকে জাম্প নিষেধ পরিবেশগত কারনে।
তারপর নিয়ে যাওয়া হলো ব্যাম্বু রাইডে।এটা প্ল্যাস্টিকের বাঁশ আকৃতির 5জন বসে একসাথে এবং স্পিড বোট দিয়ে টানে।চরম রোমাঞ্চকর!! ঢেউের সাথে একবার অনেক উঁচুতে উঠে আবার ধপাস করে নীচে।মনে হয়েছিল এই ডুবে যাবো,উল্টে যাবো!! অসম্ভব রোমাঞ্চকর।তবে হার্টে সমস্যা থাকলে এড়িয়ে যাওয়া উচিৎ, কারন শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা হয়।
ওয়াটার এক্টিভিটির পর আমাদের ফিরিয়ে আনা হলো রিসোর্টে।স্নান সেরে নেয়ার পর সেট মেনুতে খাবার পছন্দ করতে দিলো।আমি নুডুলস আর সালাত নিলাম।কাঠ আর বাঁশ দিয়ে তৈরি রেস্টুরেন্টটা সমুদ্রের উপরেই।সিঁড়ি দিয়ে পানিতে নামা যায়।রিসোর্টটা একটা ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের গা ঘেঁষে।তাই কেউড়া সহ অন্যান্য গাছ এবং শ্বাসমূল দেখা যায় রেস্টুরেন্টের নীচের পানিতে।
ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট(নুসা লেম্বগান,বালি,ইন্দোনেশিয়া)
লাঞ্চের পর হালকা বিশ্রাম করে আমরা গেলাম হাঁটা দূরত্বের একটা ঘাটে।সেখান থেকে দুজন করে এক বোটে তুলে ম্যানগ্রোভ ফরেস্টে ভিতরে নেয়া হলো।আমার কাছে এই নৌকা যাত্রায় নতুনত্ব ছিলো না।আমি আমাদের সুন্দরবন এবং থাইল্যান্ডের ক্যাবিতে গিয়েছিলাম।ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের গাছপালার বিশেষত্ব হল,সব গাছই লবণ সহ্য করতে পারে এবং গাছগুলো নরম কাদার ওপর জন্মায়।সবচেয়ে বিস্ময়কর হলো জোয়ারের পানিতে গাছের গোঁড়া সবসময় ধুয়ে যাওয়ার পরও প্রবল হাওয়া এবং প্রচণ্ড স্রোতে মাঝে দিব্যি দাঁড়িয়ে থাকতে পারে।গাছের প্রজাতিও মোটামুটি একই।এখানে আমরা গাছের গায়ে ছোট ছোট কাঁকড়ার মতো দেখেছি অনেক রঙের।এটা শুধু নতুন অভিজ্ঞতা ছিলো।
ফেরার সময় আমাদের টেম্পো প্রায় খালি,বেশীরভাগ যাত্রী রয়ে গেছে।জেটিতে এসে একজন গাইড ব্যান্ড কালার ধরে আমাদের ফাষ্ট বোটে তুলে দিলো।সেদিন সারাদিনে অনেক বার গাইড বদল হয়েছিল, কিন্তু কেউ বিন্দু মাত্র সমস্যা ফিল করতে হয়নি।এদের ব্যবস্থাপনা সুশৃঙ্খল,কে কোথায় রিসিভ করবে আগেই দাঁড়িয়ে থাকে, অভিযোগ করার সুযোগ নেই।
আমরা যখন বোটে উঠছিলাম, তখন সূর্যের লাল আভা ছড়িয়ে গেছে সাগর জলে। ধীরেধীরে লাল সূর্য সাগরের নিজেকে সপে দিয়েছে অর্ধেক। নিস্তেজ রক্তিম সূর্যটাকে বড় বৃত্তের মতো দেখাচ্ছিল।সাগরের কোলে সূর্যের এই ডুব দেয়ার এই মায়াবী দৃ্শ্য আমাকে 'সুফিয়া কামালের' কবিতা 'সাঁঝে মায়ার" কথা মনে করিয়ে দিলো।
"ধীরে ধীরে ধীরে,
প্রদীপ্ত ভাস্কর এসে বেলাশেষে দিবসের তীরে,
ডুবিল যে শান্ত মহিমায়,
তাহারি সে অস্তরাগে বসন্তের সন্ধ্যাকাশ ছায়"।
৬ষ্ঠ দিন, সকালে ব্রেকফাস্ট সেরে বের হলাম উবুদে উদ্দেশে।আমরা উবুদ আরেক দিন গিয়েছিলাম,কিন্তু একদিনে উবুদ দেখে শেষকরা যায় না।নাগরিক সুবিধাসহ বালির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে উবুদ সেরা।এছাড়া নির্জন পরিবেশে অবকাশ যাপন করতে চাইলে উবুদ উপযুক্ত স্থান।উবুদে অনেক লাক্সারি রিসোর্ট আছে।আমাদের গন্তব্য মাংকি ফরেস্টে, কিন্তামানি মাউন্টবাতুর জীবন্ত আগ্নেয়গিরি।আমার ইচ্ছে ছিল ভোর মানে প্রায় 3টায় রওনা দিয়ে ট্র্যাকিং করে কিন্তামানি মাউন্ট বাতুর উপর থেকে সূর্যাদয় দেখা।কিন্তু আমার পার্টনার রাজী হয়নি এত ভোরে উঠতে হবে বলে, আবার আমাকেও একা ছাড়াতে রাজী হননি।অগত্যা সূর্যাদয় দেখার স্বাদ অতৃপ্ত রয়ে গেল।আমি বলবো,যারা শারীরিক ফিট তারা এই ঐশ্বরিক সৌন্দর্য মিস করবেন না।বিদেশীরা দলবেঁধে যায়।আমাদের উপমহাদেশীয় মানুষ অলস বলে এই সৌন্দর্য দর্শন থেকে বঞ্চিত হয়।
ঐতিহ্যবাহী শোভাযাত্রা(বালি, ইন্দোনেশিয়া )
গাড়ী একটু চলার পরই দাঁড়িয়ে গেল। আমাদের ড্রাইভার রাস্তা পরিবর্তন করে তুলনা মূলক সরু পথে রওনা দিল।তারপরও গাড়ী চলছে শম্বুক গতিতে।কিছুসময় পর একপাশের গাড়ী একদম দাঁড়িয়ে গেল।তারপর উল্টো দিক থেকে সাদা কাপড় পরা নারীপুরুষের শোভাযাত্রা আসতে লাগলো কারো হাতে পূজার উপকরণ, কারো হাতে ফুল, কারো মাথায় ফল দিয়ে সাজানো ডালা,কারো হাতে রাজকীয় স্টাইলের রঙিন চমৎকার ছাতা।আবার কয়েকজনে মিলে টেনে চলছে স্থানীয় বাদ্যযন্ত্র, যাতে অদ্ভুত মিষ্টি সুর তুলছে।শোভাযাত্রায় খণ্ড খণ্ড মিছিল গুলোর অগ্রভাগে ছিল কাঠের কারুকার্যময় রথের মতো বিশেষ যানবাহন,তাতে আরাধ্য দেবতার বিগ্রহ।যারা এই রথ টানছে তাদের মাথায় সাদা কাপড় বাঁধা কায়দা করে।আমাদের ড্রাইভার বুঝিয়ে বলল যে এখানে শুভ-অশুভ দুই মূর্তিই আছে।বালির মানুষ বিশ্বাস করে পৃথিবীতে খারাপ ভালো সব একসঙ্গেই থাকে,বেছে নেওয়ার দায়িত্ব নিজের উপর।এমন চমৎকার দর্শনের বিশ্বাস করার জন্য বালিনিজদের প্রশংসা করতেই হয়।
আমরা প্রথমেই গেলাম উবুদ মাংকি ফরেস্টে। উবুদের সবচেয়ে সুন্দর জায়গাগুলোর মধ্যে একটি। এই ফরেস্টে না এলে জানা হতো না, বানর কতশত বান্দরামি জানে।এই বন বানরদের মুক্তাঞ্চল বা অভয়ারণ্য।এখানে বানরেরা টুরিস্ট দেখতে দেখতে এতটা অভ্যস্ত যে তারা মোবাইল বা ক্যামেরার ফ্ল্যাশে ভয় পায় না, দৌঁড়ে ভাগে না।কোন কোন বানর তো ওভার স্মার্ট,তারা ছবি তোলার জন্য পোজও দেয়।কোন কোন বানর লাফ দিয়ে ঘাড়ের ওপর উঠে পড়ে।আমার আবার এতে ভয় করে।কারন আমার সাথে বানরের সম্পর্ক খুব একটা সুবিধে নয়।তাই আমি একটু দূরত্ব বজায় রেখেছি।আমার পার্টনার অবশ্য সুসম্পর্কের সূত্র ধরে সেলফি তোলা সুযোগ পেয়েছে, বিনা বান্দরামির সমস্যায়।
আমরা এখান থেকে বেরিয়ে গেলাম উবুদ প্যালেসে।খুব কাছে।কাছেপিঠে তাই দেখে গেলাম, নয় এটা আমাদের নির্ধারিত ছিল না।উবুদের ঐতিহ্যের প্রতীক উবুদ রাজার ঐতিহ্যবাহী প্রাসাদ হলো ‘উবুদ প্যালেস’। তবে এসে মনে হল না এলে মিস করতাম।বালির সাধারণ বাড়ীঘর গুলোও স্থাপত্যরীতি অসাধারণ।কারন বালিনিজদের মাঝে সংস্কৃতির ছাপ অত্যন্ত দৃঢ়।তারা ঐতিহ্যে বিশ্বাসী।তাদের বাড়ির মূল ফটকের স্থাপত্যরীতি দেখলে মনে হয় কয়েকশ’ বছরের পুরনো।সেখানে প্যালেসের সৌন্দর্য নিয়েবলার অপেক্ষা বাখে না।
তারপর আমরা রওনা হলাম কিন্তামানি মাউন্ট বাতুর জীবন্ত আগ্নেয়গিরি দেখার উদ্দেশ্যে।এটি কুটা থেকে প্রায় ৬৪ কিলোমিটারউত্তর-পূর্বে।কিন্তামানি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪ হাজার ৫০০ ফুট উচু পাহাড়ি এলাকা। মাউন্ট বাতুর নামের জীবন্ত আগ্নেয়গিরি এবংসেই পাহাড় ঘেঁষা বাতুর হৃদ দেখতেই সেখানে যাওয়া।আমি জীবনে কখনো আগ্নেয়গিরি দেখিনি, মৃত বা জীবিত। ভূগোলে আগ্নেয়গিরি নিয়ে পড়ছি।অসম্ভব কৌতূহল নিয়েই এখানে এসেছি। ১ হাজার ৭০০ মিটার উঁচু এই পর্বতে জীবন্ত আগ্নেয়গিরি রয়েছে, পাহাড় বেয়ে ছড়িয়ে থাকা শীতল লাভা আগ্নেয়গিরিটির জীবন্ত থাকার প্রমাণ দেয়।2018 সালেও এই আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্নি উৎপাত হয়েছিল,তখন সব ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায়,প্রচুর টুরিস্ট আটকা পড়ে।উপরে উঠে মনে হলো এতদূর আসা সার্থকহয়েছে।না এলে বালির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি অধ্যায় না দেখা থেকে যেতো।
মাউন্ট বাতুরের গা ঘেঁষে চলে গেছে বালির সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক লেক বাতুর।পাহাড়ের উপর থেকে হৃদের সৌন্দর্য অভাবনীয় সুন্দর।এমন প্রাকৃতিক পরিবেশে পেট পূজার চমৎকার আয়োজনটাও ছিল লোভনীয়।আমরা সেখানে বুফে লাঞ্চ করলাম,পরিবেশগত কারনে খাবারের স্বাদও মনে হয় বেড়ে গেল।অনিচ্ছা হলেও ফেরার পথ ধরতে হলো সুন্দর কিছুক্ষণ সময় পর।ফিরতে প্রায় 3 ঘণ্টার মতো লাগলো।সকালের শোভাযাত্রার রেস পুরো কাটেনি তখনো তাই।
রাতে আমরা বের হলাম কিছু কেনাকাটার জন্য।রিসিপশান থেকে 'আগুন বালি' নামের একটা সপের নাম বলল।আমরা গ্রাবকল গেলাম।গ্রাব এবং গোজেক ট্যাক্সির এপস ডাউনলোড করে নিয়ে গিয়েছিলাম আমি। ২টাই নিয়েছিলাম কারণ অনেকস্থানে গ্রাব ট্যাক্সি পাবেন না আগেই জানতাম।কমন জায়গাগুলোতে গ্রাব আর গোজেক এর ভাড়া তুলনা করে কমটাতে যাওয়া যায়।এছাড়া ঘন্টাচুক্তি হিসেবে টেক্সি ফিক্সড করে নেয়া যায়।দিনে ৮-১০ ঘন্টার জন্য ৪-৬ লাখ রুপিয়া নিবে।তবে বেড়ানোর স্থানীয় প্যাকেজ এজেন্সি ভালো।এক জন হলে বাইক সবচেয়ে সাশ্রয়ী।'আগুন বালি' তে গার্মেন্টস,জুতা,ড্রাই ফুড,কসমেটিকসহ বিভিন্ন রকমের গিফট আইটেম পাওয়া যায়।এখানে হ্যান্ডিক্যাপের জিনিসের সৌন্দর্য আর ফিনিসিং এর তুলনায় দাম কম মনে হলো।এছাড়া জিনিশের বৈচিত্র্যও আছে।বিশেষ করে মেয়েদের জন্য বাঁশের এবং কাপড়ের তৈরি হ্যান্ড ব্যাগ দামের বিবেচনায় যেমনসস্তা, তেমন আকর্ষণীয়।আমরা কিছু কেনাকাটা করে ডিনার সেরে রুমে ফিরলাম।
রাস্তার ধারের স্থাপনার ছবি(গাড়ি থেকে তোলা )
ডে অফ সাইলেন্স ভীষণ কড়া ভাবে পালন করে সেটা টের পেলাম পরদিন।সকালের ব্রেকফাস্ট দেয়া হল রুমে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখি কোথাও কাউকে দেখা যাচ্ছে না, যে পুল বারে সারাক্ষণ গান চলে, যে সুইমিংপুলে বিভিন্ন বয়সীদের সাঁতারে সরগরম থাকে সেইপুলে নামা নিষেধ বোর্ড দেয়া।
আমার স্বভাবগত কারনে রুমে শুয়ে বসে থাকতে পারলাম না,রেব হয়ে নীচে গেলে রিসিপসানের মেয়েটা বিনয়ের স্বরে জানালো সব বন্ধ তাই দূরে না যেতে।তাকে আস্বস্ত করলাম দুরে যাবো না আশপাশেই থাকবো।আমাদের রিসোর্ট থেকে কয়েক মিনিটের হাঁটা দূরত্বে কুটা সৈকত।কাছে যেতেই নজরে এলো লাল ফিতা দিয়ে রাস্তা বন্ধ করা এবং প্রবেশ নিষেধাজ্ঞার বোর্ড।সার্ফিং এরজন্য বিখ্যাত এই বিচে সারাদিন পর্যটকদের ভীড় লেগেই থাকে,এখন জনমানব শূন্য বিরানভূমি।নিষেধাজ্ঞা মানানোর জন্য বিশেষ গার্ডও যাদের নাম 'পেকালাং'।আমার খুব ইচ্ছে হচ্ছি জনশূন্য বিচে গিয়ে বসে থাকি,সৈকত আছড়ে পড়া ঢেউের গান শুনি।কিন্তু সে ইচ্ছে আপাতত অবদমিত করে রুমে ফিরে গিয়ে রবার্ট মার্লের বই 'দ্বীপ' নিয়ে বসলাম।বইয়ে ডুবে আমার দিন মন্দ না কাটালেও প্রযুক্তি আসক্তদের জন্য দিনটি অত সুখকর ছিল না।বেচারা!!
রাতে রুমের বাহিরে এসো তো অবাক।গ্রামের রাতের মতো ঘুটঘুটে অন্ধকার।রুম ছাড়া কোথাও আলো নাই। মনে হলো নির্জন কোন দ্বীপে আছি। টাইম মেশিনে চেপে যেন অতি-আদিম এক যুগে প্রবেশ করেছি।
আমরা এত কৃত্রিম আলো আর শব্দের মধ্যে বসবাসে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি, আমরা ভুলেই গেছি এর বাহিরেও জীবন আছে।যান্যেপি ডে বা নীরবতার উৎসব না অনুভব করলে কোনও দিনও জানা হত না! পৃথিবী অন্ধকার আর শব্দহীন রাখার সৌন্দর্যটা অদেখাই থেকে যেত! অমন আদি নিস্তব্ধতা উপভোগ করা এবং কৃত্রিম শব্দহীন পৃথিবীতে প্রাণ ভরে শ্বাস নেয়ার এক অনন্য অভিজ্ঞতা হল।
উলুন দানু বেরাতান টেম্পল(বালি, ইন্দোনেশিয়া )
চেক আউটের সময় রিসিপশনে জানতে চাইলাম লেম্বগান আইল্যান্ড থেকে কুড়িয়ে আনা শঙ্খ, ঝিনুক সাথে নিতে পারবো কিনা, কারন আমি বিচ এরিয়া সহ কয়েক জায়গায় পর্যটকদের জন্য বিধিমালায় দেখেছি, সামুদ্রিক সামগ্রী কেনা, বহন নিষিদ্ধ।মেয়েটা আমাকে বুদ্ধি দিল,'তুমি এগুলো হ্যান্ডক্যারি কর,নিরাপত্তা তল্লাশির সময় তাদের দেখাবে, বলবে আমি বাই করিনি, কুড়িয়েছি।তারপর ওরা ডিসিশন দিবে'।
উলুন দানু বেরাতান টেম্পল(বালি, ইন্দোনেশীয় )
গাড়ীতে উঠে নিজের সাইড ব্যাগ খুলে চোখ গোল কারন সব রুপিয়া ভিজে ভূত।সাগরের ঢেউয়ের সাথে সখ্যতা করার সময় তোমনে ছিল না কিছু! এরপর গাড়ীর গ্লাসের সাথে চেপে ধরে ভেজা টাকা গুলোর শুকানোর অবর্ণনীয় কসরত করতে করতে এয়ারপোর্ট পৌঁচ্ছে গেলাম।ম্যানি এক্সেন্জের ছেলেটার ভ্রু কুচকানো চেহারা দেখে নিজেকে নিজে বললাম, ভবিষ্যতে সমুদ্রকে বাই বলতে যাবে বটে,তবে উইদাউট ব্যাগে😂।
একটা দেশ দেখা বা একটা দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য কখনো জানা যায় না কয়েকদিনে।তবে বাস্তব ধারনা পাওয়া যায় অনেকাংশে।আর এই কয়দিনে বালিকে ‘পৃথিবীর অন্তিম স্বর্গোদ্যান’ বা ‘দ্য লাস্ট প্যারাডাইস অন আর্থ’ বলার কারন অনুধাবন করতে পেরেছি আমি।অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি বালি দ্বীপের প্রতিটি জায়গাই অসম্ভব সুন্দর।
0 মন্তব্যসমূহ