পৃথিবীতে ভৌগোলিক বৈচিত্র্যে মতো প্রত্যেকটি জাতির ঐতিহ্যগত অভ্যাসেও ভিন্নতা রয়েছে।তেমনি চীনা জাতির সাথে অন্যান্য জাতির এই পার্থক্য খুবই সুস্পষ্ট।তাই তাদের জীবনযাত্রা থেকে খাবার,সংস্কৃতি সবকিছুতেই তার ছাপ পাওয়া যায়।
তেমনি করে তাদের বাহারি খাবারের স্বাদ ও পরিবেশনের ভিন্নতায় রয়েছে বৈচিত্র্যতা।যা ভোজন বিলাসীদের মুগ্ধ করে।তাই পৃথিবীতে সবচেয়ে জনপ্রিয় কুজিনের তালিকায় চীনা খাবার প্রথম দিকে।
আমাদের মতো চীনারাও খাবারে টক, মিষ্টি, ঝাল, নোনতা, তিতা সবই খায়; কিন্তু সেই টক, ঝাল বা মিষ্টির স্বাদ আমাদের স্বাদের মতো নয়।বলা যায় ঐতিহ্যবাহী চীনা ভেষজ ওষুধের সঙ্গে তাল রেখে চীনাদের খাবারের স্বাদ এবং গন্ধের হেরফের হয়ে থাকে।
বিশ্বের পাশাপাশি আমাদের দেশের চাইনিজ রেস্টুরেন্ট গুলোতেও চীনা খাবারের স্বাদ নেওয়ার জন্য বাঙালিদের বেশ ভিড় লক্ষ করা যায়। বিশেষ করে চাইনিজ ফ্রাইড রাইস, চাইনিজ সবজি, সঙ্গে চিকেন ফ্রাই এবং চিংড়ির মেন্যুগুলো সবার কাছে নিঃসন্দেহে অনেক মুখরোচক। তবে এ রকম মুখরোচক খাবার যে চীনে এসেও খেতে পারবেন, সেটা ভাবলে কিন্তু বড় ভুল হবে। আমাদের দেশে দেশীয় খাবারের স্বাদের সঙ্গে মিল রেখে চাইনিজ রেস্তোরাঁগুলোতে খাবার তৈরী করে।এই খাবার গুলোর নাম বাংলা চাইনিজ নাম দেয়া যায়।যার সঙ্গে চীনের খাবারের স্বাদের কোনো মিল নেই।তাদের খাবার সম্পূর্ণ ভিন্ন।
রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশের মত সারি সারি চেয়ার-টেবিলের সিস্টেম আছে আবার রুমভিত্তিকও আছে। এক একটা রুমে এক একটা বড় বড় টেবিল, একজন বা দুজন পরিবেশন কর্মী থাকে।এককথায় নিরিবিলি পরিবেশে নিজের ঘরের মতো পরিবেশে বসে গল্প গুজবের মধ্যে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।যা আমার কাছে খুব ভালো লাগে।শহরের ব্যস্ত জীবনের জন্য অধিকাংশ চাইনিজ ঘরে বড় আয়োজনে রান্না করে না,বলতে গেলে আসলে রান্না করার সময় পায় না।তাই তারা এখন রেস্টুরেন্টে খেতে অভ্যস্ত, এমনকি কাউকে নিমন্ত্রণ দিলেও তাকে সাথে নিয়ে রেস্টুরেন্টেই যায়।বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের চাইনিজদের মধ্যে এটা বেশি দেখা যায়। চায়নাতে এখন এটাই ট্রেন্ড।তারা রেস্টুরেন্টে অনেক সময় নিয়ে খায় এবং খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে গল্প করে না বরং গল্পের ফাঁকে ফাঁকে খায়।
আর একটা ব্যাপার বেশ লক্ষণীয়, তা হচ্ছে ভালো রেস্টুরেন্ট এমনকি ছোট ছোট হোটেলেও খাবার আগে থেকে রান্না করা থাকে না। গ্রাহক অর্ডার দেওয়ার পর রান্না শুরু করে, কারণ চাইনিজরা খাবার গরম গরম খেতে পছন্দ করে।
0 মন্তব্যসমূহ